শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ফজরের আযানে ‘আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম’ বলতে হবে কি ?


প্রশ্নঃ       ফজরের আযানে আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম বলতে হবে কি ? দলীল ভিত্তিক জানিয়ে বাধিত করবেন ।

উত্তরঃ      আবু মাহযুরাহ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলেছিলেন , হে আল্লাহর রাসূল ! আমাকে আযানের নিয়ম শিখিয়ে দিন ।……. তিনি তাকে আযানের শব্দগুলো শিখিয়ে দেন এবং বলেন , যদি সকলের সালাত হয় তাহলে তুমি বলবে , আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম , আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম (আবু দাউদ , মিশকাত হা/৬৪৫ , সহীহ আবু দাউদ হা/৫০০) । আলোচ্য হাদীসে সকালের সালাত দ্বারা যে ফজরের ফরজ সালাতের আযানই হবে , তা খুব সহজেই বুঝা যায় । তাছাড়া তাহাজ্জুদের সালাতকে কোন হাদীসেই সকালের সালাত বলা হয়নি । সে কারণে আবু মাহযুরাহ হতে বর্ণিত যে হাদীসে বলা হয়েছে প্রথম আযানের কথা সে আযান দ্বারা ফজরের সালাতের আযানকেই বুঝতে হবে । কারণ ইক্বামতকে অন্য হাদীসে দ্বিতীয় আযান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । তাছাড়া প্রথম আযান দ্বারা যে ফজরের সালাতের আযানকে বুঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট হয়েছে আবু মাহযুরাহ হতে বর্ণিত আরেকটি হাদীস দ্বারা , যাতে বলা হয়েছে , আবু মাহযুরাহ ফজরের আযানে আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম বলেছেন (সহীহ আবু দাউদ হা/৫০৪) ।
সহীহ বুখারী এবং মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , যখন সালাত (সালাতের সময়) উপস্থিত হয়ে যাবে তখন তোমাদের কেউ যেন আযান দেয় । অতএব সালাতের সময় হলে যখন ফজরের ফরজ সালাতের আযান দেয়া হবে তখনেই আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম বলতে হবে । আর ফজরের ওয়ক্তের পূর্বের আযান সালাতের সময় হয়ে যাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত নয় । সেহেতু ঐ আযানে আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম বলার কোন প্রশ্নই আসেনা । আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন , মুয়াযযিন যখন ফজরের আযানে হাইয়া আলাল ফালাহ বলবে , তখন (এর পরেই) বলবে , আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম (বায়হাকী) । অতএব যে হাদীসে বলা হয়েছে প্রথম ফজরের আযানে , এর দ্বারা ফজরের ফরজ সালাতের প্রথম আযান বুঝতে হবে । আর ইক্বামাত হচ্ছে দ্বিতীয় আযান ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে , তাহলে ফজরের ফরজ সালাতের ওয়াক্ত শুরুর পূর্বের আযানটি কি জন্য দেয়া হয় ? এ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , বেলাল রাতে (রাত থাকতেই) আযান দেয় তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগানোর জন্য ও ক্বিয়ামকারীদেরকে (তাহাজ্জুদের সালাত আদায়কারীদেরকে) ফিরিয়ে দেয়ার জন্য (সহীহ নাসাঈ হা/৬৪১) । অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , বেলাল রাতে আযান দেয় । অতএব তোমরা খানাপিনা অব্যাহত রাখো যে পর‌্যন্ত ইবনু উম্মে মাক্বতুম আযান না দেয় (বুখারী আযান অধ্যায় হা/৬২৩) । বেলালের আযান যে সাহরী খাওয়ার জন্য তা এ দুহাদীস থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় । অতএব যে আযান ফজরের সালাতের জন্য হবে সে আযানেই আস-সালাতু খইরুম মিনান নাওম বলতে হবে । এটাই সুন্নাত ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন