বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

জুম‘আ মসজিদ


প্রশ্নঃ      আমাদের সৈয়দপুর সেনানিবাসে গ্যারিসনে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সহ মোট ৪টি জুমআ মসজিদ আছে । এক্ষণে মুসল্লি বৃদ্ধির জন্য বাঁকী তিনটি ওয়ক্তিয়া রেখে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কেবল মাত্র একটি জুমআ করতে চাই । শরীআতে এটি জায়েজ হবে কিনা ।

উত্তরঃ     এতে শরীআতে কোন বাধা নেই ; বরং উৎসাহিত করা হয়েছে । কেননা জুমআ মসজিদের উদ্দেশ্যই হল জামাআত বড় হওয়া । জামাআত যত বড় হবে , মুসল্লির নেকী তত বেশী হবে । এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য জোরদার হয় এবং পরস্পরে পরিচিতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় । আর এটাই হল আল্লাহর কাম্য । তিনি বলেন , হে বিশ্বাসীগণ ! যখন জুমআর আযান হয় , তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দৌড়ে চলো এবং বেচা-কেনা ছেড়ে দাও । এটাই তোমাদের জন্য উত্তম , যদি তোমরা বুঝ (জুমআহ-৯) । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , জামাআতে মুসল্লি যত বেশী হবে , আল্লাহর নিকটে তা তত বেশী প্রিয়তর হবে (আবু দাউদ , নাসাঈ , মিশকাত হা/১০৬৬ ; জামাআত ও উহার ফযীলত অনুচ্ছেদ ; ঐ বঙ্গানুবাদ হা/৯৯৯ ৩/৬৪ পৃঃ) ।
সম্ভবত এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সময়ে মদীনাতে মসজিদে নববীই একমাত্র জুমআ মসজিদ ছিল । যদিও তখন মুসল্লির সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল । একবার দূরে অবস্থানকারী বনু সালামাহ গোত্র মসজিদে নববীর কাছাকাছি এসে বাড়ী করার আকাংখা ব্যক্ত করে । তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদের বলেন , হে বনু সালামাহ ! তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই থাক । কেননা এতে (দূরত্বের কারণে) মসজিদে আসতে তোমাদের পদক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের পদচিহ্ন সমূহ (তোমাদের আমল নামায়) লিখিত হবে (মুসলিম , মিশকাত হা/৭০০ ; মসজিদ সমূহ ও সালাতের স্থান সমূহ অনুচ্ছেদ ; ঐ বঙ্গানুবাদ হা/৬৪৮) । তিনি বলেন , ঐ মুসল্লি সবচেয়ে বেশী সওয়াবের অধীকারী হবে , যে সবচেয়ে দূরে থেকে মসজিদে আসে এবং ঐ মুসল্লি অধিক পুরস্কৃত হবে , যে আগে মসজিদে আসে এবং অপেক্ষা করে । অতঃপর ইমামের সাথে সালাত আদায় করে (মুত্তাফক্ব আলাইহ , মিশকাত হা/৬৯৯ ; ঐ বঙ্গানুবাদ হা/৬৪৭) ।
এমনকি দূরের  বাসিন্দা অন্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম কেও আল্লাহর রাসূল (সাঃ) মসজিদে জামাআতে না আসার ব্যাপারে অনুমতি দেননি (মুসলিম , আবু দাউদ , নাসাঈ , ইবনু মাজাহ , মিশকাত হা/১০৫৪ , ১০৭৮) । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , এক ইমামের অধীনে দুইজনের জামাআত আল্লাহর নিকট অধিক নেকী বর্ধক বিচ্ছিন্ন চারজন মুসল্লির চাইতে । অনুরুপভাবে চারজনের জামাআত আটজন বিচ্ছিন্ন মুসল্লির চাইতে এবং আটজনের জামাআত একশ জন বিচ্ছিন্ন মুসল্লির চাইতে বেশী নেকী বর্ধক (ত্বাবারানী , বাযযার , সহীহ তারগীব হা/৪১২) । ছাহেবে মিরআত বলেন , এ হাদীসে প্রতিবাদ রয়েছে ঐসব লোকের , যারা বলেন যে , সকল জামাআতের নেকী সমান । অথচ ২৭ গুণ নেকী বেশী হওয়ার হাদীস তার চাইতে বেশী নেকী হওয়ার হাদীসগুলিকে রদ করে না (মিরআত হা/১০৭৩ এর ব্যাখ্যা , ৩/৫১০ পৃঃ) ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন