বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১

২৫ বছর আগে আমি একটি কোম্পানীর শেয়ার কিনি।


প্রশ্ন  : ২৫ বছর আগে আমি একটি কোম্পানীর শেয়ার কিনি। বর্তমানে তা মূল টাকার চাইতে অনেক গুণ বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন বর্তমানের বর্ধিত মূল্য গ্রহণ করা আমার জন্য জায়েয হবে কি?

উত্তর : শেয়ার বিক্রি করে পুরা টাকা উত্তোলন করুন। অতঃপর আসলটা রেখে দিন ও বাকীটা কোন কল্যাণকর কাজে ব্যয় করুন। কেননা ওটা সূদ। আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে আপনাকে অভাবমুক্ত করবেন এবং এর উত্তম প্রতিদান দিবেন। তিনি বলেন,
যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ খুলে দেনএবং তিনি তাকে রূযী দান করেন এমন পথে, যা সে ধারণাও করতে পারে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হন (তালাক ২-৩)

কখন, কিভাবে ও কার মাধ্যমে মীলাদের প্রচলন ঘটে?


প্রশ্ন  : মীলাদ শরীফ সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদীছটি ولما تم من حمله صلى الله عليه وسلم تعة أشهر ... وأخذها المخاض فولدته صلى الله عليه وسلم نورا يتلأ لأسناه- কি ছহীহ? কখন, কিভাবে ও কার মাধ্যমে মীলাদের প্রচলন ঘটে? কিয়ামের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দেওয়ার প্রচলন কবে, কিভাবে থেকে শুরু হয়? মা আমেনার প্রসবকালে মারিয়ম, আসিয়া, হাজেরা (আঃ) সকলে দুনিয়ায় নেমে এসে সবার অলক্ষ্যে ধাত্রীর কাজ করেন- এটা কি কোন হাদীছ?

উত্তর : উপরের কথাগুলি কোন হাদীছ নয়। এগুলির রচয়িতা হলেন
মাওলিদুন্নবী বইয়ের লেখক মদীনার একজন শাফেঈ মুফতী ইমাম জাফর আল-বারযানজী (মৃঃ ১১৭৭ হিঃ/১৭৬৪ খৃঃ)। উক্ত বইয়ে তিনি মা আমেনার প্রসবকালে আসিয়া, মারিয়াম প্রমুখের আগমন ইত্যাদি যেসব কথা লিখেছেন, এগুলি ভিত্তিহীন কল্পকথা মাত্র। ইরাকের এরবল প্রদেশের গবর্ণর আবু সাঈদ মুযাফফরুদ্দীন কুকুবুরী কর্তক সর্বপ্রথম ৬০৪ হিঃ মতান্তরে ৬২৫ হিজরী সনে মীলাদের প্রচলন হয়। আলেমদের মধ্যে তাকে এর ব্যাপারে সাহায্য করেন আবুল খাত্ত্বাব ওমর বিন দেহিইয়া। তিনি মীলাদের পক্ষে আততানভীর ফী মাওলিদিস সিরাজিল মুনীর নামে একটি বই লিখে গভর্ণরকে উপহার দেন এবং বিনিময়ে এক হাযার স্বর্ণমুদ্রা বখশিষ পান। মীলাদ আবিষ্কারের প্রায় একশ বছর পরে ক্বিয়াম আবিষ্কার হয় (দ্রঃ মীলাদ প্রসঙ্গ ৬-৮)। রাসূলের জীবদ্দশাতেই ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। তাঁর মৃত্যুর পরে ধর্মের নামে যা কিছুই চালু করা হউক, সবই বিদআত। যার পরিণাম জাহান্নাম (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০; নাসাঈ হা/১৫৭৯)

আমাদের দেশের অনেক মেয়েদের বিভিন্ন মিডিয়ায়


প্রশ্ন  : আমাদের দেশের অনেক মেয়েদের বিভিন্ন মিডিয়ায় ও বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপনের মডেল বা অভিনেত্রী হিসাবে অংশ নিতে দেখা যায়। এদের কেউ কেউ নিয়মিত ছালাত, ছিয়াম আদায় করে থাকে। শারঈ দৃষ্টিতে এর পরিণতি কি হতে পারে? উল্লেখ্য যে, এসব মেয়েদের অভিভাবকরা এটাকে সাদরে মেনে নিয়েছেন এবং এজন্য তারা গর্ব অনুভব করেন।

উত্তর : পরপুরুষকে দেখানোর জন্য সাবালিকা মেয়ের যেকোন অঙ্গভঙ্গি ইসলামে নিষিদ্ধ (নূর ৩১)। যারা এটা করেন ও যারা এটা সমর্থন করেন উভয়ে আল্লাহর বিধান লংঘনকারী। আর আল্লাহ কোন সীমালংঘনকারীকে ভালবাসেন না (আলে ইমরান ৫৭)। প্রকৃত অর্থে ছালাত-ছিয়াম আদায়কারী ব্যক্তি এগুলিকে কখনোই সমর্থন করতে পারেন না। অতএব ঐ মুছল্লী লোক দেখানো ছালাত আদায়কারী মাত্র
(মাঊন ৫)। কেননা প্রকৃত মুছল্লী ব্যক্তিকে তার ছালাত যাবতীয় ফাহেশা ও মুনকার কাজ থেকে বিরত রাখে (আনকাবূত ৪৫)

জনৈক ব্যক্তি ছালাত আদায়কালে রুকু হতে উঠে


প্রশ্ন  : সদ্য সঊদী ফেরৎ জনৈক ব্যক্তি  ছালাত আদায়কালে রুকু হতে উঠে পুনরায় বুকে হাত বাঁধেন। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান যে, সঊদী আরবের ইমামদেরকে এমনটাই করতে দেখেছেন। এমতবস্থায় কোনটি অধিক ছহীহ ও সুন্নাতসম্মত তা দলীল সহকারে জানাবেন।

উত্তর :ছালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার
আম হাদীছের উপর (বুখারী, মিশকাত হা/৭৯৮) ভিত্তি করেই উক্ত বিষয়টি চালু হয়েছে। তবে রুকু থেকে উঠে ক্বওমায় দাঁড়ানোর নিয়ম সম্পর্কে হাদীছে খাছভাবে বর্ণিত হয়েছে যতক্ষণ না অস্থি সমূহ স্ব স্ব জোড়ে ফিরে আসে (বুখারী, মিশকাত হা/৭৯২)। এক্ষণে দুহাত সহ দেহের অস্থিসমূহকে স্ব স্ব জোড়ে ফিরে আসতে গেলে ক্বওমার সময় হাতকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দেওয়াকেই ছহীহ হাদীছ সমূহের যথাযথ অনুসরণ বলে অনুমিত হয় (দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৯১-৯২ পৃঃ)

শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে কবর আযাব


প্রশ্ন : শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে কবর আযাব মাফ হয় কি? দলীল ভিত্তিক জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
কোন মুসলমান যদি জুমআর দিনে অথবা জুমআর রাতে মারা যায়, আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হতে রক্ষা করেন (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৬৭)। ইমাম সুয়ূত্বী বলেন, কেননা জুমআর দিন জাহান্নাম উত্তপ্ত করা হয় না। এর দরজা বন্ধ থাকে। জাহান্নামের দারোগার এদিন অন্য দিনের ন্যায় কাজ থাকে না। এ দিন আল্লাহ যদি কোন বান্দার মৃত্যু ঘটান, তাহলে ঐ বান্দা ঐ সুযোগ লাভে ধন্য হয় (মিরআত ৪/৪৪১ পৃঃ)। তবে এর অর্থ এটা নয় যে, মুশরিক ও মুনাফিকরা স্থায়ীভাবে কবর আযাব হতে মুক্তি পাবে।

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১

দাড়ি শেভ করা লোক ছালাতে ইমামতি


প্রশ্ন  : দাড়ি শেভ করা লোক ছালাতে ইমামতি করতে পারবে কী?

উত্তর : এটা নিঃসন্দেহে গোনাহের কাজ। কেউ একাজ করলে ফাসেক বা পাপী হবে। তার পিছনে ছালাত আদায় করলে মাকরূহ হবে (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৭৭; আবু দাঊদ, মিশকাত হা/৭৪৭,
মসজিদ ও ছালাতের স্থান সমূহ অনুচ্ছেদ)। তবে তার পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েয। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, অনেকেই তোমাদেরকে ছালাত আদায় করাবে। তারা যদি (ছহীহ সুন্নাহ মোতাবেক) সঠিকভাবে ছালাত আদায় করায়, তাহলে তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে। আর যদি ভুল করে তাহলে তোমাদের জন্য নেকী এবং তাদের জন্য গোনাহ রয়েছে (বুখারী, মিশকাত হা/১১৩৩ ছালাত অধ্যায়)। তবে এইরূপ ব্যক্তিকে ইমাম বানানো যাবে না। কেননা তাতে সুন্নাত অমান্যকারীকে সম্মান করা হবে। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুনকার কিছু দেখলে তা হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। নইলে যবান দিয়ে। নইলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করবে। আর এটি হল দুর্বলতম ঈমান (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭ শিষ্টাচার অধ্যায় আমর বিন মারূফ অনুচ্ছেদ-২২)