সোমবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১১

সবাইকে মুসলিম বলে পরিচয় দিতে হবে


প্রশ্নঃ       জনৈক আলেম বলেন , হানাফী , শাফেয়ী , মালেকী আহলে হাদীস বলে কাউকে পরিচয় দেওয়া উচিত নয় ; বরং সবাইকে মুসলিম বলে পরিচয় দিতে হবে উক্ত দাবী কি সঠিক ?

উত্তরঃ      সবাই মুসলিম বলে পরিচয় দিলে কোন সমস্যা নেই দাওয়াতী ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকরী কিন্তু যেহেতু মাযহাবী পরিচয় দিয়ে বহু বিদআদকে সমাজে চালু রাখা হয়েছে সেহেতু সহীহ হাদীসের অনুসারী হিসেবে আহলুল হাদীস নামটি বৈশিষ্ট্যগত পরিচিতি হিসাবে বলা হয়ে থাকে কারণ আহলুল হাদীস মুসলিমগণই হচ্ছেন একমাত্র হক্বপন্থী দল ক্বিয়ামত পর্যন্ত একটি দল হক্বের উপরে দৃঢ় থাকবে মর্মে যে সকল সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে (সহীহ মুসলিম হা/১৯২০ , সহীহ তিরমিযী হা/২২২৯) সে দল সম্পর্কে মুহাদ্দিছগণের বক্তব্য হলো তারা হলেন আহলুল হাদীস
উক্ত হক্বপন্থী দল কোনটি এর ব্যাখ্যায় ইয়াযীদ ইবনু হারুন বলেন , তারা যদি আহলুল হাদীস গণ না হন তাহলে আমি জানি না তারা কারা ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বলও একই কথা বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারাক বলেন , আমার নিকট এ হক্বপন্থী দলটি হচ্ছে আহলুল হাদীস উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় আলী ইবনুল মাদীনী ও ইমাম বুখারী একই কথা বলেন (দ্রঃ সিলসিলাহ সহীহাহ হা/২৭০-এর ব্যাখ্যা) অতএব যারাই সহীহ দলীল ভিত্তিক নিজেদের সার্বিক জীবন পরিচালনা করে তারাই আহলে হাদীস এটি বিদআতীদের থেকে পৃথক বৈশিষ্ট্যগত স্বাতন্ত্রের পরিচয় মাত্র যেমন কুরআনে মুহাজির ও আনছারদের স্ব স্ব বৈশিষ্ট্যগত নামে প্রশংসা করা হয়েছে (তওবা - ১০০) যদিও তারা উভয় দলই মুসলিম ছিলেন

‘যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাবে


প্রশ্নঃ       অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে এস জনৈক বুজুর্গ বলেন ,যে ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাবে সে শহীদ হয়ে যাবে , কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে এবং সকাল-সন্ধা তাকে জান্নাতের রিজিক দেয়া হবে উক্ত হাদীসের সনদ সম্পর্কে জানতে চাই ?

উত্তরঃ      বর্ণনাটি জাল(যঈফ ইবনে মাজাহ হা/১৬৫১ ; সিলসিলাহ যঈফাহ হা/৪৬৬১)

উলুল আমর বলতে কাকে বুঝানো হয়েছে ?


প্রশ্নঃ       আল্লাহ তায়ালা বলেন , তোমরা আল্লাহ , তাঁর রাসূল ও উলুল আমরের আনূগত্য কর উলুল আমর বলতে কাকে বুঝানো হয়েছে ? তারা কি একাধিক হবেন ?

উত্তরঃ      এর দ্বারা ইসলামী রাষ্ট্রের ও ইসলামী সংগঠনের মুহাদ্দিছ-আমীর , ফক্বীহ ও মুত্তাকী আলেম গণকে বুঝানো হয়েছে যারা আল্লাহর আনুগত্য এবং তার নবীর সহীহ সুন্নাহ মোতাবেক মানুষকে সৎ পখে চলার আদেশ দেন তারাই উলুল আমরের অন্তর্ভূক্ত (তাফসীরে ইবনে কাছীর , সূরা নিসা ৫৯ দ্রঃ)

কাতারের মাঝখানে পিলার বা দেওয়াল


প্রশ্নঃ       কাতারের মাঝখানে পিলার বা দেওয়াল রেখে সালাত আদায় করা যাবে কি ?

উত্তরঃ      যাবে না কারণ রাসূল (সাঃ) এতে নিষেধ করেছেন (সহীহ ইবনু মাজাহ হা/১০০২) তবে লোক সমাগম বেশি হওয়ার কারণে স্থান সংকুলান না হলে বাধ্য হয়ে দাঁড়ানো যেতে পারে (সহীহ তিরমিযী হা/২২৯ , সনদ সহীহ) উল্লেখ্য , পিলারের মাঝে কেউ একাকী সালাত আদায় করলে অথবা ইমাম একা দাঁড়ালে কোন সমস্যা নেই

বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ কে ?


প্রশ্নঃ       আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক হিজরী শতাব্দীর শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ প্রেরণ করেন যিনি দ্বীনের সংস্কার করবেন (আবু দাউদ) হাদীসটি কি সহীহ ? বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ কে ?

উত্তরঃ      হাদীসটি সহীহ (আবু দাউদ হা/৪২৯১ ; মিশকাত হা/২৪৭ ইলম অধ্যায়) বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ কে হবেন বা হয়েছেন , তা এখনও স্পষ্ট নয় আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন তবে বিগত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হিসাবে শায়খ আলবানীকে ধরা হয়ে থাকে

একই সালাতে দুই বারের বেশী তাশাহহুদ পড়া যাবে কি ?


প্রশ্নঃ       মাগরীব সালাতে মাসবুক মুছল্লি ইমামকে তাশাহহুদ অবস্থায় পেলে সে কি করবে ? একই সালাতে দুই বারের বেশী তাশাহহুদ পড়া যাবে কি ?

উত্তরঃ      শুধু মাগরীব নয় যে কোন সালাতে মাসবুক মুছল্লি ইমামকে যে অবস্থায় পাবে সে অবস্থায় সালাতে শরীক হবে এবং যা ছুটে যাবে তা পূর্ণ করবে (বুখরী হা/৬৩৬ ; মুসলিম হা/৬০২) দুরাকাআত সালাত আদায় করে তাশাহহুদ পড়তে হয় অতএব শেষ তাশাহহুদ পাওয়ার কারণে মাসবুকের তিনটি তাশাহহুদ হয়ে যাবে এতে সালাতের কোন ক্ষতি হবেনা বরং সে সালাতে যোগদানের নেকী পাবে

বারবার তওবা করে বারবার গুনাহে লিপ্ত


প্রশ্নঃ       বারবার তওবা করে বারবার গুনাহে লিপ্ত হলে তওবা কবুল হবে কি ?

উত্তরঃ      বারবার তওবা করেও যদি কেউ একই গুনাহে জড়িত হয় তাহলে মনে করতে হবে যে , তার তওবা শর্ত মাফিক হচ্ছে না এর পরেও তওবার দরজা আল্লাহ খুলে রেখেছেন বান্দা যতই গোনাহ করুক অনুতপ্ত হয়ে পুনরায় সেই পাপ করবে না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , আল্লাহ তার বান্দার তওবা কবুল করেন তার মৃত্যু লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া পর্য্ ন্ত (তিরমিযী , ইবনু মাজাহ , মিশকাত হা/২৩৪৩ দোয়া সমূহ অধ্যায় তওবা ও ইস্তিগফার অনুচ্ছেদ ৪) তবে তওবার নামে কেউ প্রতারণা করলে আল্লাহ তার ব্যবস্থা নিবেন তিনি কিয়ামতের দিন মানুষের হৃদয় ও কর্ম উভয়টিরদিকে দৃষ্টিদিবেন (মুসলিম হা/২৫৬৪ ; মিশকাত হা/৫৩১৪ রিক্বাক্ব অধ্যায় রিয়া অনুচ্ছেদ ৫)

রবিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১১

মদ খেয়ে ইবাদাত করলে ইবাদাত কবুল হবে কি ?


প্রশ্নঃ       মদ খেয়ে ইবাদাত করলে ইবাদাত কবুল হবে কি ?

উত্তরঃ      মদ পান কারীর চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হবে না সে যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে (সহীহ ইবনে মাজাহ হা/৩৩৭৭) তওবা ব্যতীত তার গোনাহ মাফ হবে না (যুমার-৫৩)

নগদ ও বাকী বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মূল্যের কমবেশী


প্রশ্নঃ       রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একই পণ্যে দুই ধরনের ব্যবসা নিষেধ করেছেন এক্ষণে নগদ ও বাকী বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মূল্যের কমবেশী করা যাবে কি ?

উত্তরঃ      উক্ত প্রশ্ন সঠিক হয়নি বরং একই কেনা-বেচার মধ্যে দুটি শর্ত নিষেধ করা হয়েছে ( সহীহ তিরমিযী হা/১২৩৪ ; সহীহ আবু দাউদ হা/৩৫০৪) ফলে একই পণ্যে নগদে এক মূল্য আর বাকীতে এক মূল্য পৃথক করা থাকলে তাতে কোন সমস্যা নেই কারণ এরুপ ক্রয়-বিক্রয় একই বেচা-কেনার মধ্যে শামিল নয়  

এই ব্যবসা কি জায়েয ?


প্রশ্নঃ       সোনার ব্যবসার নাম করে বিভিন্ন জনের নিকট ২২০০০০ টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে এই শর্তে যে , মাসিক ৪৬০০০ টাকা করে দশ মাস প্রদান করে ৪৬০০০০ টাকা লভ্যাংশ সহ মূল টাকা পরিশোধ করা হবে এই ব্যবসা কি জায়েয ?

উত্তরঃ      এগুলো ব্যবসার নামে স্পষ্ট সূদী কারবার , যা হারাম (মুসলিম , মিশকাত হা/২৮০৭) এটা এক প্রকার প্রতারণা , যা রাসূল (সাঃ) নিষেধ করেছেন (মুসলিম , মিশকাত হা/৩৫২০)

পুনরায় আযান


প্রশ্নঃ       একই মসজিদে কোন ওয়াক্তে একজন আযান দিল এবং প্রয়োজনে সে বাইরে গেল এই ফাঁকে আরেকজন এসে পুনরায় আযান দিল এক্ষণে করণীয় কি ?

উত্তরঃ      এতে করণীয় কিছু নেই কারণ সে না জেনে দিয়েছে উভয়ে নেকী পাবে তবে কোন এক সালাতের জন্য একবার আযান হওয়াই সুন্নাত

ঈদগাহে একাধিক জামা‘আত করা যাবে কি ?


প্রশ্নঃ       জায়গা সংকুলান না হলে একই ঈদগাহে একাধিক জামাআত করা যাবে কি ?

উত্তরঃ      একই ঈদগাহে একাধিক জামাআত করা যাবে না জায়গা সংকুলান না হলে ঈদের মাঠ বড় করে অথবা অন্য কোন খোলা ময়দানে একই স্থানে ঐক্যবদ্ধভাবে সালাত আদায় করবে রাসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম একই মাঠে একাধিকবার ঈদের জামাআত করেছেন , মর্মে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না এক মাঠে একাধিক জামাআত হলে নিম্নোক্ত সমস্যাগুলো দেখা দিবেঃ
(যারা পরে পড়বে তারা সঠিক সময়ে পড়তে পারবে না অথচ নবী করীম (সাঃ) সূর্য উঠার পর পরই সালাত আদায় করতেন (ইবনে মাজাহ হা/১৩১৭ ; আবু দাউদ হা/১০৪০)
(জামাআত চলাকালীন পরের জামাআতের আশায় দাঁড়িয়ে থাকবে যা সুন্নাতের বরখেলাফ
(বড় জামাআতের নেকী হতে বঞ্চিত হবে
(আগে ও পরে পড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব হবে
(সুন্নাত অনুযায়ী দীর্ঘ খুৎবা দেওয়ার সুযোগ হবে না

উক্ত ব্যবসা কি বৈধ ?


প্রশ্নঃ       অধিকাংশ স্বর্ণ ব্যবসায়ী গহনা তৈরির সময় মূল স্বর্ণের সাথে অন্য ধাতু মিশ্রণ করে স্বর্ণের দামে বিক্রি করে উক্ত ব্যবসা কি বৈধ ?

উত্তরঃ      ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য কেউ এমনটি করলে এই ব্যবসা অবশ্যই হারাম হবে আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন , রাসূল (সাঃ) প্রতারণার মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন ( মুসলিম , মিশকাত হা/২৮৫৫) পক্ষান্তরে খাদ মিশিয়ে গহনা বানালে এবং সে হিসেবে দাম কম নিলে ও ক্রেতাকে সেটা জানিয়ে দিলে সেটা ধোঁকা হবে না

এজন্য তিনি গোনাহগার হবেন কি ?


প্রশ্নঃ       আমার বন্ধু একজন সরকারী কর্মচারী সরকারী নির্দেশমতে তাকে মন্দির ও মাজারে ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে হয় শিরকের কেন্দ্রে এসব কাজ করতে তার ঈমান বাধা দেয় কিন্তু বাধ্য হয়ে করেন এজন্য তিনি গোনাহগার হবেন কি ?

উত্তরঃ      পাপের কাজে সাহায্য করা অবশ্যই পাপ আল্লাহ বলেন , তোমরা সৎকর্মে ও আল্লাহভীরুতার কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সাহয্য করো না (মায়েদাহ-) তবে এ কাজে তার বিবেকে বাধা দেয়াটা ঈমানের পরিচয় তাকে দ্রুত এ চাকরী ছেড়ে অন্য কোন নিরাপদ ও হালাল পেশা গ্রহন করতে হবে নইলে এক সময় তার অন্তরে পাপের অনুভূতিটুকুও নষ্ট হয়ে যাবে যা তাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে আল্লাহ বলেন , হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক (তওবা-১১৯)

সোমবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১১

সূরা তওবার ৭৫ ও ৭৬ নং আয়াতদ্বয়


প্রশ্নঃ       সূরা তওবার ৭৫ ও ৭৬ নং আয়াতদ্বয় কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে ?

উত্তরঃ      অনুবাদঃ- আর তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে , যারা আল্লাহর নিকট ওয়াদা করে যে , আল্লাহ যদি আমাদের উপর অনুগ্রহ করেন , তবে আমরা দান-খয়রাত করব ও নেককার লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব ( তওবা-৭৫ ) অতপর যখন আল্লাহ তাদেরকে অনুগ্রহ করলেন , তখন তারা তাতে কার্পণ্য করতে লাগলো এবং হঠকারিতার সাথে বিমুখতা অবলম্বন করল ( তওবা-৭৬) উক্ত আয়াতের শানে নুযুল প্রসঙ্গে বলা হয় যে , ছালাবা (রাঃ) এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত আয়াত নাযিল হয়েছে ইবনু কাছীর (রহঃ) উক্ত ঘটনাটি বর্ননা করেছেন কোনরুপ মন্তব্য ছাড়াই প্রকৃত প্রস্তাবে উক্ত ঘটনা সঠিক নয় ইমাম কুরতুবী সহ অন্যান্য বহু মুফাসসির এই ঘটনা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন ( তাফসীরে কুরতুবী ৮/২১১ পৃঃ , উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ ; আলবানী , সিলসিলাহ যঈফাহ হা/১৬০৭) তাছাড়া ঐ নামে দুজন ব্যক্তি ছিলেন একজন বদরী সাহাবী , যিনি ওহোদ যুদ্ধে শহীদ হন তার নামে উক্ত কৃপণতা ও রাসূলের অবাধ্যতার ঘটনা ডাহা মিথ্যা ও বানোয়াট ছাড়া কিছুই নয় অন্য জনের নামে হলে সেটার সূত্র অত্যন্ত যঈফ যদিও ইবনু জারীর ও ইবনু কাছীর স্ব-স্ব তাফসীরে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন ( তাফসীরে এবনু কাছীর , উক্ত আয়াতের টীকা দ্রষ্টব্য)

বিড়ি , সিগারেট , জর্দা , গুল , হিরোইণ --এগুলো খেলে সালাত কবুল হবে কি ?


প্রশ্নঃ       বিড়ি , সিগারেট , জর্দা , গুল , হিরোইণ হারাম বস্তু এগুলো খেলে সালাত কবুল হবে কি ?

উত্তরঃ      এগুলো মাদকের অন্তর্ভুক্ত এবং হারাম বস্তু রাসূল (সাঃ) বলেন , যার বেশীতে মাদকতা আসে , তার অল্পটাও হারাম (তিরমিযী , আবু দাউদ , ইবনু মাজাহ , মিশকাত হা/৩৬৪৫ দন্ডবিধি অধ্যায় মদ্যপান অনুচ্ছেদ) আল্লাহ তায়ালা বলেন , পবিত্র বস্তু তাদের জন্য হালাল করা হয়েছে এবং অপবিত্র বস্তু হারাম করা হয়েছে (রাফ/১৫৭) আল্লাহ পবিত্র তিনি পবিত্র বস্তু ভিন্ন কবুল করেন না ( মুসলিম , মিশকাত হা/২৭৬০ হালাল উপার্জন অনুচ্ছেদ) অতএব এসব অপবিত্র বস্তু খেলে তওবা না করা পর্য্ ন্ত কিভাবে সালাত কবুল হবে

মাসিক অবস্থায় মেয়েরা মুখস্ত কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না ।


প্রশ্নঃ       এনটিভির প্রশ্নোত্তরে বলা হয়েছে মাসিক অবস্থায় মেয়েরা মুখস্ত কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না তবে দোয়া দরুদ পড়তে পারবে উক্ত ফয়সালা কি সঠিক হয়েছে ?

উত্তরঃ      উক্ত ফয়সালা সঠিক হয়নি কারণ ঋতু অবস্থায় সালাত আদায় করা ও ত্বাওয়াফ করা যায় না (বুখারী হা/৩০৫-) ইবনে আব্বাস (রাঃ) অপবিত্র ব্যক্তির জন্য কুরআন পাঠ করাকে কোর দোষের কাজ মনে করতেন না নবী করীম (সাঃ) সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতেন (বুখারী ঋতু অধ্যায় , ঋতুবতী নারী ত্বাওয়াফ ব্যতীত হজ্জের যাবতীয় বিধান পালন করবে, অনুচ্ছেদ ) অতএব স্পর্শ না করে জুনুবী অবস্থায় মুখস্ত কুরআন পড়তে পারবে উল্লেখ্য যে , ঋতুবতী এবং জুনুবী কুরআন পড়তে পারে না মর্মে বর্ণিত হাদীসটি মুনকার ও বাতিল (আলবনী , তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৪৬১)

সম্মিলিত মুনাজাত


প্রশ্নঃ       কোন কোন জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সম্মিলিত মুনাজাত করেছেন ?

উত্তরঃ      বৃষ্টির পানি চাওয়ার জন্য ও কুনুতে নাযেলার সময় ইমাম ও মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দোয়া করেছেন ( আবু দাউদ , মিশকাত হা/১৫০৮ ; আলবানী , ছিফাতু সালাতিন নাবী পৃঃ১৫৯ )

রবিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১১

নূহ (আঃ) –এর প্লাবনের সময় এক বুড়ি তাঁকে বলেছিলেন


প্রশ্নঃ       জনৈক আলেম বলেন , নূহ (আঃ) এর প্লাবনের সময় এক বুড়ি তাঁকে বলেছিলেন , প্লাবনের পূর্ব মুহুর্তে আমাকে খবর দিবেন কিন্তু নুহ (আঃ) তাকে বলতে ভুলে যান প্লাবনের পর দেখা গেল উক্ত বুড়ি বেঁচে আছেন এ ঘটনা কি সত্য ?

উত্তরঃ      উক্ত ঘটনা মিথ্যা ও বানোয়াট

এসব দরুদ পড়া কি জায়েজ ?


প্রশ্নঃ       আমাদের এলাকায় প্রায় মসজিদের ইমামগণ সালাত শেষে মুছল্লিদেরকে নিয়ে গোল হয়ে বসেন বিভিন্ন রকমের দরুদ পড়ে থাকেন যেমন বালাগুল উলা , ছাল্লাল্লাহু , ইয়া মুহাম্মাদ , ইয়া রাসূলুল্লাহ , ইয়া হাবীবাল্লাহ ইত্যাদি এসব দরুদ পড়া কি জায়েজ ?

উত্তরঃ      এসব দরুদ সুন্নাত বিরোধী যা পড়লে নেকীর স্থানে গুনাহ হবে একদা সাহাবীগণ বলেন , হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ! আল্লাহ আমাদেরকে আপনার উপর সালাত ও সালাম দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপনার উপর কিভাবে সালাত পড়বো ? তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , তোমরা বল আল্লাহুম্মা ছল্লি আলা……….’(মুত্তাফাক্ব আলাইহ , মিশকাত হা/৯১৯) অর্থাৎ দরুদে ইব্রাহীম আর এভাবে গোল হয়ে বসে বিভিন্ন জিকির করার বিরুদ্ধে ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর কঠিন ধমকিপূর্ণ হাদীসটি অতি প্রসিদ্ধ (দারেমী হা/২০৪ , সনদ সহীহ)  

কোন বিষয়ে আল্লাহর কাছে বিচারদেওয়া


প্রশ্নঃ       কোন বিষয়ে আল্লাহর কাছে বিচার দেওয়ার পর পুনরায় সে বিষয়ে মানুষের কাছে বিচার চাওয়া যাবে কি ?

উত্তরঃ            এমতাবস্থায় অন্যের কাছে বিচার না চাওয়াই ভালো কারণ যারা সঠিক পথে তাদের পক্ষ থেকে ফেরেস্তারা প্রতিবাদ করেন আর সঠিক পথের ব্যক্তি যদি প্রতিবাদ করতে যায় তাহলে ফেরেস্তারা সরে যান (আহমাদ , মিশকাত হা/৫১০২ ; সনদ সহীহ , সিলসিলাহ সহীহাহ হা/২২৩১) অন্য হাদীসে এসেছে , আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন , একজন লোক বলল , হে আল্লাহর রাসূল  (সাঃ) ! আমার কিছু প্রতিবেশী রয়েছে আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি কিন্তু তারা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আমি তাদের সাথে ভাল আচরণ করি কিন্তু তারা আমার সাথে মন্দ আচরণ করে আমি তাদের সাথে নরম ও ধৈর্য্ শীল হতে চাই কিন্তু তারা আমার সাথে রুক্ষতা প্রকাশ করে জবাবে নবী করীম (সাঃ) বলেন , তুমি যেমন বলছ বিষয়টি যদি এমন হয় , তাহলে তুমি তাদের মুখে ছাই নিক্ষেপ করছ আর সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য সহযোগী থাকবে তুমি যতদিন এ নীতি অবলম্বন করবে (মুসলিম , মিশকাত হা/৪৯২৪) তবে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হলে সক্ষম অবস্থায় অন্যায়ের প্রতিরোধ করবে (মুসলিম , মিশকাত হা/১৫৭;৫১৩৭) অন্যথায় পূর্বোক্ত নীতি অবলম্বন করবে

মসজিদের মাইকে আযান


প্রশ্নঃ       মসজিদের মাইকে আযান ব্যতীত অন্য কোন ঘোষণা দেয়া যাবে কি ? যেমন মৃত সংবাদ , হারানো বিজ্ঞপ্তি , সরকরী ঘোষণা চিকিৎসার ঘোষণা ইত্যাদি

উত্তরঃ            মসজিদে আযান ব্যতীত অন্য কোন ঘোষণা না দেওয়াই উচিত যেমন হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা যাবে না রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , কেউ মসজিদে হারানো বিজ্ঞপ্তি শুনলে সে যেন বলে আল্লাহ যেন তোমাকে জিনিসটি ফেরত না দেন কারণ মসজিদ এ কাজের জন্য বানানো হয়নি (বুখারী , মুসলিম , মিশকাত হা/৭০৬) অনুরুপ , মৃত সংবাদও প্রচার করতে রাসূল (সাঃ) নিষেধ করেছেন (সহীহ তিরমিযী হা/৯৮৬) সরকারী ঘোষণা ও চিকিৎসার ঘোষণার সাথে মসজিদের কোন সম্পর্ক নেই