সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১১

সূরা বাক্বারাহ ১১৫ নং আয়াতের সঠিক অর্থ


প্রশ্ন :সূরা বাক্বারাহ ১১৫ নং আয়াতের সঠিক অর্থ জানতে চাই।
   وَلِلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللهِِ

উত্তর : উক্ত আয়াতের অর্থ হল,
আর আল্লাহর জন্যই পূর্ব এবং পশ্চিম। সুতরাং যে দিকেই তোমরা মুখ ফিরাও সেই দিকেই আল্লাহর চেহারা রয়েছে
উল্লেখ্য যে, তাফসীর মাআরেফুল কুরআনের বঙ্গানুবাদে বলা হয়েছে,
তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান এই ভ্রান্ত ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই উক্ত ভুল অনুবাদ করা হয়েছে। অন্যদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদে বলা হয়েছে, যেদিকেই মুখ ফিরাও সেই দিকই আল্লাহর দিক। উক্ত অনুবাদ দুটির কোনটিই সঠিক হয়নি। বস্ত্তত: আল্লাহর হাত, পা, চেহারা ইত্যাদি সম্পর্কে কুরআনে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবেই অনুবাদ করতে হবে। কোনরূপ দূরতম ব্যাখ্যা বা রূপক অর্থ করা যাবে না। কেননা আল্লাহর আকার-আকৃতি অন্যকিছুর সাথে তুলনীয় নয়। তিনি বলেন, তার তুলনীয় কিছু নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা (শূরা ১১)
মূল ঘটনাটি ছিল এই যে, একদা কতিপয় ছাহাবী কোন এক অজ্ঞাত স্থানে ছালাত আদায় করার সময় ক্বিবলার দিক ভুলে উল্টা দিকে ফিরে ছালাত আদায় করেন। তারা রাসূল (ছাঃ)- কে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করলে উক্ত আয়াত নাযিল হয় (তিরমিযী হা/২৯৫৭, সনদ হাসান)

দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে


প্রশ্ন  :দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খাদ্য মজুত রাখার পরিণাম সম্পর্কে জানতে চাই।

উত্তর : এধরনের জঘন্য কর্মের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
যে ব্যক্তি খাদ্যের দাম বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে খাদ্য মজুত করে সে মহাপাপী (মুসলিম হা/৪২০৬; মিশকাত হা/২৮৯২)। এরূপ ব্যবসায়ী মহল, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বড় ধরনের প্রতারক ও ধোঁকাবাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের সাথে প্রতারণা করল, সে আমাদের দলভুক্ত নয় (মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৬০)

প্রত্যেক ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী


প্রশ্ন  : প্রত্যেক ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী পড়ার হাদীছটিকে মিশকাতে যঈফ বলা হয়েছে। তাহলে আমরা এর প্রতি আমল করি কেন?

উত্তর : মিশকাতে উদ্ধৃত আলী কর্তৃক বর্ণিত বায়হাক্বীর উক্ত হাদীছটি যঈফ, যা মিশকাতেই বলে দেওয়া হয়েছে
(বায়হাক্বী, শুআবুল ঈমান, মিশকাত হা/৯৭৪; সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৭৪)। তবে পৃথক সনদে নাসাঈ কুবরাতে ও ছহীহ ইবনে হিববানে আবু উমামা থেকে ছহীহ সনদে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে (নাসাঈ কুবরা হা/৯৯২৮; বিস্তারিত দ্রঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২)। আর সেটা হল- যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই বাধা দিবে না

আমরা জানি, আবাবীল নামক পাখির


প্রশ্ন  :আমরা জানি, আবাবীল নামক পাখির মাধ্যমে আল্লাহ আবরাহা ও তার সৈন্য বাহিনীকে ধ্বংস করেছিলেন। কিন্তু জনৈক মাওলানা খুৎবায় বলেন, উক্ত কথা সঠিক নয়। এখানে আবাবীল অর্থ ঝাঁকে ঝাঁকে। উক্ত দাবীর সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাই।

উত্তর : আপনার জানাটা ভুল এবং উক্ত মাওলানার দাবীই সঠিক।
আবাবীল শব্দটি বহুবচন। এর অর্থ ঝাঁকে ঝাঁকে, পাখির দল। উক্ত পাখির কোন নাম উল্লেখ নেই। এই পাখি আল্লাহ প্রেরিত গযবের পাখি, যা আরবরা পূর্বে বা পরে কখনো দেখেনি (তাফসীরে কুরতুবী ২০/১৩৫)

আল্লাহ তা‘আলা রাসূল (ছাঃ)-কে মি‘রাজে


প্রশ্ন  : আল্লাহ তাআলা রাসূল (ছাঃ)-কে মিরাজে নিয়ে গেলে রাসূল (ছাঃ) আল্লাহকে আত্তাহিয়াতু... বলে অভ্যর্থনা জানান। ফলে আল্লাহও তাঁকে সালাম দেন। এর ছহীহ দলীল জানতে চাই।

উত্তর : ঘটনাটি ভিত্তিহীন। মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) মিশকাতের ভাষ্য গ্রন্থ মিরক্বাতুল মাফাতীহে ইবনুল মালেকের উদ্ধৃতি দিয়ে উক্ত ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তার কোন সনদ উল্লেখ করেননি (মিরক্বাত ২/৩৩১ পৃঃ
তাশাহহুদ অধ্যায়)। আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) বলেন, এই বর্ণনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। ঘটনাটির যদি দলীল পাওয়া যেত তাহলে নির্দেশনাটি কতই না সুন্দর হ(মিরআত ৩/২৩৩ পৃঃ)। শায়খ আলবানী (রহঃ)ও একই মন্তব্য করেছেন (ছিফাতু ছালাতিন নবী (মূল), ৩/৮৭৬ পৃঃ)
উক্ত বিষয়টি মি
রাজের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এটি সাধারণ সম্বোধন যা নবীকে অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে করা হয়েছে (দ্রঃ আনফাল ৬৪, ৬৫, ৭০ প্রভৃতি)

শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১১

ঋণ করে ফিৎরা দেওয়া ও কুরবানী করা


প্রশ্ন  : ঋণ করে ফিৎরা দেওয়া ও কুরবানী করা যাবে কি?

উত্তর : যাবে। যদি পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম পরস্পরকে ঋণ দিতেন (বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৫; ফিক্বহুস সুন্নাহ ৩/১৮৪ পৃঃ)। তাছাড়া কুরবানীর বিষয়টি সামর্থ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট। যার সামর্থ্য আছে সেই কুরবানী করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
যে ব্যক্তি তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না যায় (আহমাদ, ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩; বুলূগুল মারাম হা/১৩৪৯)

রামাযান মাসে ক্বদরের রাত্রে পশু-পাখি,


প্রশ্ন  : রামাযান মাসে ক্বদরের রাত্রে পশু-পাখি, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি সবই আল্লাহকে সিজদা করে। একথা কি সঠিক?
 
উত্তর : কেবল ক্বদরের রাত্রে এগুলো আল্লাহকে সিজদা করে একথা সঠিক নয়। বরং আসমান-যমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহকে সিজদা করে
(নাহল ৪৯)

মহিলাদের মাঝে শাড়ি-কাপড় চুড়ি আলতা ফিতা


প্রশ্ন  : অনেক দাড়ি-টুপিওয়ালা লোক ফেরী করে বাসায় বাসায় গিয়ে মহিলাদের মাঝে শাড়ি-কাপড় চুড়ি আলতা ফিতা ও তরি-তরকারী বিক্রয় করে। অনেক সময় মহিলাদের হাতে চুড়ি পরিয়ে দেয়। এ ব্যবসা কি জায়েয?

উত্তর : উক্ত ব্যবসা জায়েয। তবে মহিলারা তাদের সামনে যেতে পারবে না এবং তাদের কাছ থেকে চুড়ি পরিয়ে নিতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, মহিলারা হচ্ছে গোপন বস্ত্ত। বাড়ীতে থাকাই হ
ল তাদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা (ত্বাবারাণী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৮৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, শয়তান মানুষের শিরা-উপশিরায় চলাচল করে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮)। আর নারী হল শয়তানের সবচেয়ে লোভনীয় হাতিয়ার। এই হাতিয়ার দিয়েই ইতিপূর্বে পৃথিবীর বড় বড় সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। এজন্যেই আল্লাহ পর্দা ফরয করেছেন। যা পুরুষ ও নারী উভয়কে মেনে চলতে হয় (নূর ৩০-৩১)

তাবলীগ জামাতের লোকেরা বলে,


প্রশ্ন  :তাবলীগ জামাতের লোকেরা বলে, জীবনে অন্তত তিন চিল্লা দিতে হবে। এ সময় আহল-পরিবার ছেড়ে যেতে হয়। এভাবে চিল্লা দেয়া কি জায়েয?

উত্তর : চিল্লায় যাওয়া যাবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম সবচেয়ে বেশী দাওয়াতী কাজ করেছেন কিন্তু তারা চিল্লা নামে ৪০ দিনের কোন সীমা নির্ধারণ করেছেন মর্মে দলীল পাওয়া যায় না। অনুরূপভাবে তিন চিল্লা, বছর চিল্লা, জীবন চিল্লারও কোন অস্তিত্ব নেই। এ ধরনের বিদ
আতী দল সমূহের প্রচারণার অধিকাংশই মিথ্যা ও জাল, যা থেকে বেঁচে থাকা যরূরী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কেউ যদি আমার উপর ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যারোপ করে. তাহলে তার ঠিকানা হল জাহান্নাম (বুখারী, মিশকাত হা/১৯৮)

বাথরুমে নাকি আল্লাহর নাম স্মরণ করা যায় না।


প্রশ্ন  : বাথরুমে নাকি আল্লাহর নাম স্মরণ করা যায় না। কিন্তু এখন প্রায়ই বাথরুমে ওযূ-গোসল করতে হয়। এ সময় বিসমিল্লাহ বলে ওযূ করা যাবে কি?

উত্তর : বাথরুমে
বিসমিল্লাহ বলা যাবে না এমনটি নয়। বরং পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় কোন ইবাদত করা যাবে না। এ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে কেউ সালাম দিলে তিনি উত্তর দিতেন না। তিনি প্রয়োজন সেরে উঠে পরে উত্তর দিতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৩৫)। বাথরুমে ওযূ করলে বিসমিল্লাহ বলেই ওযূ করতে হবে। কারণ বিসমিল্লাহ ছাড়া ওযূ হয় না (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪০২)

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১১

এমন কোন আমল আছে কি যা করলে আমি


প্রশ্ন  : এমন কোন আমল আছে কি যা করলে আমি কবরের চাপ থেকে মুক্তি পাব?

উত্তর : এজন্য সর্বাগ্রে শিরক মুক্ত হ
তে হবে এবং শরীআত অনুমোদিত নেক আমল করতে হবে (কাহফ ১১০)। কবরের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য নির্দিষ্ট কোন আমল নেই। নবী করীম (ছাঃ) কবরের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দোআ পড়তেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) ছালাত হতে সালাম ফেরানোর পূর্বে চারটি বস্তু হতে পরিত্রাণ চাইতেন। তার একটি হচ্ছে কবরের শাস্তি (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১২৮), যা ছালাতের শেষ বৈঠকে পড়া হয়।

খাৎনা অনুষ্ঠান করা এবং দাওয়াত খাওয়া যাবে কি?


প্রশ্ন  : খাৎনা অনুষ্ঠান করা এবং দাওয়াত খাওয়া যাবে কি?

উত্তর : খাৎনার অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং এর দাওয়াতও খাওয়া যাবে না। কারণ এগুলো কুসংস্কার, যা সমাজ থেকে তুলে দেয়া যরূরী।
 খাৎনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত এবং ইসলামী নিদর্শন সমূহের অন্যতম। যা সন্তানের অভিভাবককে পালন করতে হবে। যেখানে কোন প্রচার থাকবে না বা কোন অনুষ্ঠান থাকবে না। রাসূল ও ছাহাবীগণ এর জন্য কোন অনুষ্ঠান করেননি।

তারাবীহর ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দো‘আ


প্রশ্ন  :তারাবীহর ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দোআ আছে কি? বিভিন্ন মসজিদে তারাবীহর ছালাতে মুনাজাতের সময় ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু বলে যে দোআ পড়া হয় তা বলা যাবে কি?
 
উত্তর : তারাবীহর ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দো
আ নেই। তাছাড়া প্রচলিত পদ্ধতিতে যে মুনাজাত করা হয় তাও শরীআত সম্মত নয় এবং উক্ত দোআ পাঠের প্রমাণে কোন দলীল পাওয়া যায় না।

জনৈক ইমাম বলেন, রাসূল (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে খাবার নিয়ে


প্রশ্ন  :জনৈক ইমাম বলেন, রাসূল (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে খাবার নিয়ে আসার জন্য বললেন। ঐ ব্যক্তি গিয়ে দেখে যে কুকুরে খাদ্য খাচ্ছে। অতঃপর রাসূলকে গিয়ে বললে তিনি বললেন, সেখান থেকে ফেলে দিয়ে নিয়ে এসো। অতঃপর গিয়ে দেখে শূকরে খাচ্ছে। সে ফিরে এসে রাসূলকে বললে তিনি বলেন, সেখান থেকে ফেলে দিয়ে নিয়ে এসো। অতঃপর গিয়ে দেখে যে বেনামাযী খাচ্ছে। এবার রাসূলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আর খাওয়া যাবে না সবটুকু ফেলে দাও। এর দ্বারা তিনি বেনামাযীর প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করেন। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?

উত্তর : উক্ত বক্তব্য রাসূলের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মাত্র।

আমাদের কাছে একটি প্রচার পত্র এসেছে


প্রশ্ন  : আমাদের কাছে একটি প্রচার পত্র এসেছে যাতে তিন ওয়াক্ত ছালাতের দাবী করা হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত নাকি নেই। বিষয়টি জানতে চাই।

উত্তর : উক্ত দাবী ভ্রান্ত ও মিথ্যা। এক শ্রেণীর অজ্ঞ ও পথভ্রষ্ট লোকেরা এই দাবী করে থাকে। যারা এদের কথা মেনে নেয় তারা মুসলমান থাকতে পারে না। কারণ আল্লাহ তা
আলা বলেন, রাসূল যা দিয়েছেন তা তোমরা গ্রহণ কর। আর তিনি যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন কর (হাশর ৭)। অগণিত ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করতেন এবং ছাহাবীগণ পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত পড়তেন। কাজেই ঐসব ধর্মত্যাগী মহল থেকে সাবধান থাকুন।

সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০১১

প্রথম আলো ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ইং সংখ্যায়


প্রশ্ন  :প্রথম আলো ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ইং সংখ্যায় দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-এর অধ্যাপক আবুল মনিম খান এক নিবন্ধে বলেন, যে ব্যক্তির কাছে ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময় জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ ব্যতীত সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা অথবা সমমূল্যের অন্য কোন সম্পদ থাকে তার উপর ছাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। এই পরিমাণ সম্পদকে শরীয়তের পরিভাষায় নিছাব বলা হয়। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উপর ছাদাকাতুল ফিৎর আদায় করা ওয়াজিব। উক্ত দাবী কি সঠিক?

উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভুল। যাকাত প্রদানের সময় নিছাবের প্রয়োজন হয়। ফিৎরা প্রদানের সময় নিছাবের প্রয়োজন নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ফেতরার যাকাত ধনী-গরীব সবার উপর ফরয করেছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮১৫)। কিন্তু যাকাত কেবল ধনীর উপর ফরয। ফিৎরার বিপরীত যাকাত সম্পর্কে বলা হয়ছে যে, যাকাত ধনীদের থেকে নিতে হবে আর গরীবদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে (বুখারী, মুসলিম মিশকাত হা/১৭৭২)

আমি বড় ছেলের কথা শুনে ত্রাণ আত্মসাৎ করেছি,


প্রশ্ন  : আমি বড় ছেলের কথা শুনে ত্রাণ আত্মসাৎ করেছি, জমি লুটপাট করেছি এবং দুর্বলদের উপর অত্যাচার করেছি। এখন সমাজের লোকেরা আমাকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করেছে। সূরা মায়েদার ৩৩নং আয়াত অনুযায়ী আমাকে বহিষ্কার করা ঠিক হয়েছে কি?

উত্তর : বক্তব্য সঠিক হ
লে ছেলে সহ প্রশ্নকারীর কঠিন শাস্তি হওয়া আবশ্যক। যা সূরা মায়েদার ৩৩ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। অনুবাদ : যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সাথে লড়াই করে এবং পৃথিবীতে বির্পযয় সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের জন্য নির্ধারিত শাস্তি এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে, কিংবা শুলে চড়ানো হবে, অথবা তাদের হাত ও পা উল্টা দিক হতে কেটে ফেলা হবে। কিংবা দেশ হতে নির্বাসিত করা হবে। তাদের জন্য এ দুনিয়ায় অপমান ও লাঞ্ছনা। আর পরকালে রয়েছে এর চেয়ে কঠিন শাস্তি (মায়েদাহ ৩৩)

রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১১

ওয়াসীলা কাকে বলে?


প্রশ্ন  : ওয়াসীলা কাকে বলে? মানুষকে অসীলা ধরা যায় কি? মানুষে বলে অমুকের অসীলায় অমুক পেয়েছি। এভাবে বলা যায় কি?

উত্তর :
وَسِيْلَةٌ শব্দটি একবচন বহু বচনে وَسَائِلُ অর্থ নৈকট্য, নৈকট্যের উপায়। অসীলা এমন ইবাদত যা আল্লাহর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়। অর্থাৎ ইবাদতের মাধ্যমে নৈকট্য লাভ করা (লোগাতুল কুরআন)। অসীলা দুই প্রকার (১) সিদ্ধ অসীলা। যেমন- (ক) আল্লাহর নামের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা (আরাফ ১৮০)। (খ) ঈমান ও নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা (গ) আল্লাহর সত্তার মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা (ঘ) নিজের দুর্বলতা ও প্রয়োজন প্রকাশ করে আল্লাহকে ডাকা। (ঙ) জীবিত সৎ মানুষের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা। যেমন ছাহাবীগণ আববাস (রাঃ)-এর মাধ্যমে পানি চেয়েছিলেন (বুখারী, মিশকাত হা/১৫০৯)। (চ) পাপ স্বীকার করে আল্লাহকে ডাকা। (২) দ্বিতীয় প্রকার হল নিষিদ্ধ অসীলা। যেমন- (ক) মৃত মানুষের নিকট চাওয়া (খ) নবী কিংবা অন্যের ইয্যতের দোহাই দিয়ে চাওয়া (গ) কোন সৃষ্টির মাধ্যমে চাওয়া। তবে জীবিত মানুষ কোন কাজের অসীলা হতে পারে।

জুম‘আর দিন দো‘আ কবুলের সময় কখন?


প্রশ্ন  : জুম‘আর দিন দো‘আ কবুলের সময় কখন? খুৎবার সময় চুপে চুপে দো‘আ করা যাবে কি?

উত্তর : জুমআর দিন দো‘আ কবুল হওয়ার দু’টি সময়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। (১) ইমাম ছাহেবের মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে ছালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত (মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৫৭-৫৮)। (২) আছরের পর থেকে নিয়ে সূর্য ডোবা পর্যন্ত (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৬০)। তবে প্রথমটিই অগ্রগণ্য (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), পৃঃ ১০৯-১০)

বাল্য অবস্থায় যারা মারা যায়


প্রশ্ন  : বাল্য অবস্থায় যারা মারা যায় তারা জান্নাতে যাবে, না জাহান্নামে যাবে?

উত্তর : শিশু অবস্থায় যারা মারা যায় তারা জান্নাতে যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জান্নাত দেখার সময় অনেক ছেলেমেয়েকে ইবরাহীম (আঃ)-এর সামনে  দেখলেন,  যারা  জনগণের সন্তান (বুখারী, মিশকাত হা/৪৬২১)। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, জিবরীল (আঃ) বললেন, যারা তাওহীদের উপর মারা গেছে তারাই ইবরাহীম (আঃ)-এর সামনে আছে। তখন  ছাহাবীরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! মুশরিকদের সন্তানেরাও? তিনি উত্তরে বললেন, মুশরিকদের ছেলেরাও (বুখারী, মিশকাত হা/৪৬২৫ ‘স্বপ্ন’ অধ্যায়)। অন্য এক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, মুশরিকের ছেলেরা জান্নাতের খাদেম হবে (ত্বাবারাণী আওসাত্ব, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৬৮)

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১১

সূরা নাজম-এর ৩২ নং আয়াতে


প্রশ্ন  : সূরা নাজম-এর ৩২ নং আয়াতে اَلْلَّمَمَ বলে কোন ধরনের অপরাধকে বুঝানো হয়েছে।

উত্তর :
لَمَمَ শব্দটি কোন জিনিসের সামান্য পরিমাণ কিংবা সামান্য প্রভাব অথবা স্বল্প সময় থাকা বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন اَلَمَّ بِالْمَكَانِ ‘সে অমুক স্থানে সামান্য সময় অবস্থান করেছে اَلَمَّ بِالطَّعَامِ ‘সে সামান্য পরিমাণ খাবার খেয়েছে’। কুরআনে শব্দটি বান্দার কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যারা বড় বড় গুনাহ আর সুস্পষ্ট অশ্লীল ও জঘন্য কাজকর্ম হ’তে বিরত থাকে- তবে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি তাদের দ্বারা ঘটে যায়, (তাদের জন্য) তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ব্যাপক ও বিশাল তাতে সন্দেহ নেই (নাজম ৩২)

একটি জামে মসজিদে অন্তত একজনকে


প্রশ্ন  : একটি জামে মসজিদে অন্তত একজনকে ই‘তেকাফে বসতে হবে। একথা কি ঠিক?

উত্তর : অন্তত একজনকে ই‘তেকাফে বসতে হবে নইলে মহল্লার লোকেরা গোনাহগার হবে একথা ঠিক নয়। কারণ ই‘তেকাফ যেমন কোন ফরয ইবাদত নয়, তেমনি মহল্লার মসজিদে একজনকে বসতেই হবে একথাও ঠিক নয়। ই‘তেকাফ একটি সুন্নাত ইবাদত, যা ছিয়াম অবস্থায় জুম‘আ মসজিদে করতে হয় (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২১০৬ ‘ই‘তেকাফ’ অনুচ্ছেদ)

ছিয়াম অবস্থায় রক্ত বের হলে


প্রশ্ন  : অনেকের ধারণা ছিয়াম অবস্থায় রক্ত বের হলে ছিয়াম নষ্ট হয় বা দুর্বল হয়ে যায়। উক্ত ধারণা কি সঠিক?

উত্তর: উক্ত ধারণা সঠিক নয়। কারণ এটা ছিয়াম ভঙ্গের কারণ সমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। রক্ত বের হলে ছিয়াম নষ্ট হয় না এবং দুর্বলও হয় না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছিয়াম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করেছেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০০২)

কোন্ জিনিস দ্বারা মানত করা যায়?


প্রশ্ন  : কোন্ জিনিস দ্বারা মানত করা যায়? ছালাত, ছিয়াম, টাকা-পয়সা, ফল-মূল, মোমবাতি, আগরবাতি, খিঁচুড়ী এসব মানত করা যায় কি?

উত্তর : সকল নেকীর কাজের দ্বারা মানত করা যায়। মানত হচ্ছে যরূরী নয় এমন কিছু কাজকে নিজের উপর যরূরী করে নেয়া। নেকীর কাজের মানত করলে তা পালন করতে হবে। আর পাপের কাজের মানত করলে তা পালন করতে হবে না (বুখারী, মিশকাত হা/৩৪২৭)। শিরক ও বিদ‘আতী কোন দিবস বা স্থানে কোন মানত করা যাবে না (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৪৩৭ ‘শপথ ও মানত’ অধ্যায়)

ব্যাঙ, কুঁচে, চিংড়ি এবং কচ্ছপ ও তার ডিম


প্রশ্নঃ  : ব্যাঙ, কুঁচে, চিংড়ি এবং কচ্ছপ ও তার ডিম খাওয়া কি জায়েয?

উত্তর : কুঁচে, চিংড়ি, কচ্ছপ ও তার ডিম রুচি হ’লে খাওয়া যায়। কারণ এগুলো পানিতে বসবাস করা প্রাণী। আর পানির শিকার (যা হিংস্র নয়) হালাল। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের জন্য সাগরের শিকার হালাল করা হয়েছে
(মায়েদাহ ৯৬)। তবে ব্যাঙ খাওয়া জায়েয নয়। কারণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেছেন। আব্দুর রহমান ইবনে ওছমান (রাঃ) বলেন, একজন ডাক্তার ব্যাঙকে ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল। রাসূল (ছাঃ) তাকে ব্যাঙ মারতে নিষেধ করলেন (আবুদাঊদ হা/৩৮৭১)

বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১১

মেডিসিনের সাহায্যে নারীদের সুন্দর হওয়া


প্রশ্ন  : মেডিসিনের সাহায্যে নারীদের সুন্দর হওয়া কি জায়েয?

উত্তর : যে কোন বৈধ বস্তু ব্যবহার করে নারীরা সুন্দরী হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, পুরুষের সুগন্ধি হচ্ছে যার গন্ধ প্রকাশ পায় কিন্তু রং গোপন থাকে। আর নারীদের সৌন্দর্য হচ্ছে যার রং প্রকাশ পায় কিন্তু সুগন্ধি গোপন থাকে (নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৪৩)। তবে সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না। যেমন ভ্রূ তোলা যাবে না, দাঁত চিকন করা যাবে না, সাদা চুল ও দাড়ি কালো করা যাবে না ইত্যাদি। কেননা এতে সৃষ্টির ও আকৃতির পরিবর্তন ঘটে, যা হারাম (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩১)

উক্ত দো‘আ পড়ার কোন দলীল আছে কি?


প্রশ্ন  : اللهم صمت لك وتوكلت على رزقك  وأفطرت برحمتك يا أرحم الراحمين      উক্ত দো‘আ পড়ার কোন দলীল আছে কি?

উত্তর : উক্ত দো‘আ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) বলেন, এটি মানুষের মুখের প্রচলিত কথা মাত্র। এর কোন ভিত্তি নেই (মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৬/৩০৪ পৃঃ)। এছাড়া কোন কোন স্থানে নিম্নোক্ত দো‘আটিও চালু আছে-
باسم الله والحمد لله اللهم لك صمت وعلى رزقك أفطرت وعليك توكلت سبحانك وبحمدك تقبله مني إنك أنت السميع العليم-
কিন্তু উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটিও মুনকার, যা অগ্রহণযোগ্য। (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯৯৬)। তাছাড়াও ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া ‘আলা রিযক্বিকা আফতারতু’ মর্মে সমাজে যে দো‘আ চালু আছে সেটাও যঈফ (যঈফ আবুদাঊদ হা/২৩৫৮; মিশকাত হা/১৯৯৪)। অতএব ইফতারের সময় সাধারণ দো‘আ হিসাবে ‘বিসমিল্লাহ’ বলাই উচিত।

জনৈক আলেম বলেন,


প্রশ্ন  :জনৈক আলেম বলেন, ইবনু আববাস (রাঃ) হাজারে আসওয়াদকে চুম্বন করতেন এবং সিজদা করতেন (বায়হাক্বী, হাকেম)। তাহলে কি হাজারে আসওয়াদকে সিজদা করা যাবে?

উত্তর: উক্ত বর্ণনা যঈফ ও মুনকার (আলোচনা দ্রঃ সিলসিলা যঈফাহ হা/৪১৬৯)। ছহীহ হাদীছ সমূহে শুধু চুম্বন করার কথা এসেছে (বুখারী হা/১৫৯৭; মিশকাত হা/২৫৮৯)

মাগরিবের ছালাতের পূর্বে


প্রশ্ন  : মাগরিবের ছালাতের পূর্বে যে দুই রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা হয় তার গুরুত্ব কতটুকু?

উত্তর : আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তোমরা মাগরিবের পূর্বে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় কর। তোমরা মাগরিবের পূর্বে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় কর, তোমরা মাগরিবের পূর্বে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় কর, যে ব্যক্তি ইচ্ছা কর
(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১১৬৫)। আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে মাগরিবের ছালাতের পূর্বে সূর্য ডোবার পর দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতাম। তাঁকে বলা হ’ল, তিনি কি সেই দুই রাক‘আত পড়তেন? আনাস (রাঃ) বললেন, তিনি আমাদেরকে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতে দেখতেন, তিনি আদেশ করতেন না নিষেধও করতেন না (মুসলিম হা/৩০৩)। নির্দেশটি তিনবার বলার মধ্যেই উক্ত নফল ছালাতের গুরুত্ব বুঝা যায়। অতএব সুযোগ ও সাধ্যমত এটির উপর আমল করা কর্তব্য।

মসজিদে প্রদত্ত মানতের জিনিস


প্রশ্নঃ  : মসজিদে প্রদত্ত মানতের জিনিস বিক্রি করে সে অর্থ মসজিদের কাজে লাগানো যাবে কি?

উত্তর : এটা মানতকারীর নিয়তের উপরে নির্ভরশীল (ফাতাওয়া লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২য় খন্ড, নযর অধ্যায়, পৃঃ২৯৩-৯৪; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১)। সুতরাং মসজিদের জন্য মানত করলে তা মসজিদের কাজে লাগাবে।

মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১১

ওমরী ক্বাযা ছালাত আদায়


প্রশ্নঃ  : ওমরী ক্বাযা ছালাত আদায় করার কোন ছহীহ দলীল আছে কি?

উত্তর : ‘ওমরী ক্বাযা’ আদায় করার কোন শারঈ ভিত্তি নেই। কোন ব্যক্তির বিগত দিনের ছেড়ে দেওয়া ছালাত ও ছিয়ামের জন্য অনুতপ্ত হয়ে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অন্যায় না করার প্রতিজ্ঞা করে খালেছ নিয়তে তওবা করলে তার অতীতের গোনাহগুলো মাফ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তাকে অতীতের ছালাত ও ছিয়াম আদায় করতে হবে না। কেননা বান্দার শেষ আমলটাই গ্রহণযোগ্য হবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮৩, ‘তাক্বদীরের উপর ঈমান’ অধ্যায়)। সুতরাং তওবা কবুল হ’লে পূর্বের অন্যায় কর্মের হিসাব আল্লাহ নিবেন না (যুমার ৫৩; তাহরীম ৮)

জনৈক বক্তা জুম‘আর খুৎবায় বলেন,


প্রশ্ন  : জনৈক বক্তা জুম‘আর খুৎবায় বলেন, ছাহাবী আবু ছা‘লাবা সম্পদ বৃদ্ধির কারণে জামা‘আতে ছালাত ত্যাগ করেছিলেন এবং তিনি যাকাত দিতেও অস্বীকার করেছিলেন। এ ঘটনা কতটুকু সত্য?

উত্তর : ঘটনাটি জাল বা মিথ্যা (বিস্তারিত দ্র. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৭/২৪৪-৪৬ পৃঃ, সূরা তওবা ৭৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যা)

কোন মুসলমানের ঘর হিন্দু ব্যক্তিকে ভাড়া দেওয়া


প্রশ্ন  : কোন মুসলমানের ঘর হিন্দু ব্যক্তিকে ভাড়া দেওয়া এবং প্রাপ্ত ভাড়ার টাকা মুসলিম ব্যক্তি সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য খরচ করতে পারবে কি-না?

উত্তর : সাধারণভাবে কোন অমুসলিমকে ঘর ভাড়া দেওয়া যাবে। তবে যদি সেখানে দেব-দেবী, মূর্তি-প্রতিমা রাখা হয় বা পূজা করা হয়, তবে সে ব্যক্তির নিকটে ঘর ভাড়া দেওয়া উচিত নয়। কেননা তখন হারাম কাজে সহযোগিতা করা হবে, যা শরী‘আতে নিষিদ্ধ (মায়েদাহ ২)। এমতক্ষেত্রে উক্ত ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থও সংসারে খরচ করা যাবে না (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়)

কোন কোন মসজিদে কমিটির সভাপতি


প্রশ্ন  : কোন কোন মসজিদে কমিটির সভাপতি বা মোতাওয়াল্লির জন্য ইমামের পিছনে প্রথম কাতারের মাঝখানের জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখা হয়। যদিও তার পূর্বে অনেক মুছল্লী মসজিদে উপস্থিত হন। এভাবে কারো জন্য মসজিদের কোন স্থান নির্দিষ্ট রাখা কি বৈধ?

উত্তর : মসজিদে কারো জন্য কোন জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখা ঠিক নয়। বরং যিনি আগে আসবেন, তিনি প্রথম কাতারে দাঁড়াবেন (মুসলিম; মিশকাত হা/১০৯০)। তবে বিচক্ষণ ও দ্বীনি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিগণই ইমামের নিকটবর্তী ও পিছনে দাঁড়াবেন। অতঃপর অন্যরা দাঁড়াবে (মুসলিম, হা/৪৩২; মিশকাত হা/১০৮৮-৮৯)। যাতে করে তারা ইমামের ভুলের ক্ষেত্রে তাকে সতর্ক করতে পারেন এবং প্রয়োজনে ইমামের স্থলাভিষিক্ত হ’তে পারেন (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২২৯)