বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১১

কথাগুলি কি ঠিক?


প্রশ্ন : ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকের উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক অধ্যাপক মীলাদুন্নবীর উপর লিখতে গিয়ে সূরা আহযাব ৫৬ আয়াতের বরাতে নবীর উপর দরূদ পাঠকে ঐরূপ ফরয বলেছেন যেরূপ ছালাত ও যাকাত ফরয। (২) অনুরূপভাবে তিনি বলেছেন, মিরাজের রাতে সিদরাতুল মুনতাহার উপরে যেতে জিব্রীল অপারগতা প্রকাশ করেন। কারণ ওটা ছিল নূরের জগত। তাই নূরুম মিন নূরিল্লাহ হিসাবে রাসূল একাই রফরফ যোগে সেখানে যান। অত:পর তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে গিয়ে জাগতিক সময়ের হিসাবে ২৭ বছর কাল যাবৎ বাক্যালাপ করেন। কথাগুলি কি ঠিক?

উত্তর: যে রাসূলের উপর উক্ত আয়াত নাযিল হয়েছে, সেই রাসূলই বলেছেন, ইসলাম পাঁচটি বুনিয়াদের উপর দন্ডায়মান : কলেমা, ছালাত, যাকাত, ছিয়াম ও হজ্জ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪)। তাছাড়া জিব্রীল নিজে এসে ছাহাবীদের মজলিসে ইসলামের ঐ পাঁচটি ফরযের কথা শিক্ষা দিয়েছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/২)। নবীর উপর দরূদ পাঠ নি:সন্দেহে নেকীর কাজ (মিশকাত নবীর উপর দরূদ পাঠ অনুচ্ছেদ)। তবে তা ফরয নয়। বরং যখনই রাসূলের নাম বলা হবে, বা শোনা হবে, তখনই দরূদ পাঠ করে বলবে ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম। এজন্য তাঁর জন্মদিনে বিশেষভাবে ঘটা করে জন্মদিবস পালন করা বিদআত। এটা সুন্নাত বা ফরয হলে রাসূল (ছা:) ও তাঁর খলীফা ও ছাহাবীগণ এটা করতেন। তাঁরা যা করেননি, ধর্মের নামে কোন মুসলমান তা করলে সে বিদআতী ও গোনাহগার হবে। (২) তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছানোর পর তাঁকে বায়তুল মামূরে উঠানো হয় এবং সেখানে তার উপর অহি নাযিল হয় অত:পর এ সময়ে তাঁকে ফরয ছালাত সহ তিনটি বস্ত্ত প্রদান করা হয় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৬৩-৫৮৬৫)। এগুলি সবই হয়েছে নূরের জগতে যা অদৃশ্যলোকে অবস্থিত এবং মর্ত্যলোকের সাথে যা তুলনীয় নয়। সেখানকার গায়েবী খবর যতটুকু রাসূল বলেছেন, তার বেশী বলার ক্ষমতা কারু নেই। অতএব বাড়তি সকল কথাই পরিত্যাজ্য। জানা আবশ্যক যে, রাসূল নূরের নবী ছিলেন না। তিনি ছিলেন মাটির তৈরী মানুষ। যেকথা আল্লাহ নিজেই কুরআনে বলেছেন (কাহফ ১১০)। আল্লাহর হুকুম হলে মাটির মানুষও নূরের জগতে প্রবেশ করতে পারে। এজন্য রাসূলকে নূরের নবী বানানোর অযথা কষ্টকল্পনার কোন প্রয়োজন নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন